সাফাইকর্মী থেকে সাংসদ, নিউজিল্যান্ডে নয়া ইতিহাস

বেঙ্গল মিরর ডেস্কঃ আমাদের দেশে চা-ওয়ালা হয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। কিন্তু একজন শরণার্থী বা সাফাইকর্মী সাংসদ? হ্যাঁ, নিউজিল্যান্ডে এবার নয়া ইতিহাস। জানা গিয়েছে, ইব্রাহিম ওমর শরণার্থী হিসেবে নিউজিল্যান্ডে ঢুকেছিলেন। দু’বেলা খাবার জোগাড় করতে বেছে নিয়েছিলেন সাফাইকর্মীর কাজ। এবারের নির্বাচনে তিনিই দেশটির পার্লামেন্ট সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন। ইব্রাহিম ওমরের জীবনে এই উত্থান সিনেমার মতো মনে হলেও, বাস্তবটা ছিল বেশ কঠিন। আন্তর্জাতিক সাংবামাধ্যম বিবিসির খবরে বলা হয়েছে, ইব্রাহিম ওমরের জন্ম ইরিত্রিয়ায়। এক সময় তিনি শরণার্থী হিসেবে নিউজিল্যান্ডে পাড়ি জমান। তবে ইরিত্রিয়া থেকে নিউজিল্যান্ডে গিয়েই তিনি যে আইনপ্রণেতা বনে গেছেন, এমনটা নয়। দীর্ঘ এক পথ পাড়ি দিতে হয়েছে তাঁকে।

ইব্রাহিম ২০০৩ সালে ইরিত্রিয়া থেকে প্রথমে পাড়ি জমান যুদ্ধবিধ্বস্ত সুদানে। ইরিত্রিয়া হাবের খবরে বলা হয়েছে, সুদানে শরণার্থীশিবিরে বেশ কয়েক বছর কাটিয়েছেন তিনি। সেখানে তিনি দোভাষী হিসেবে কাজ করছেন। কিন্তু সেখানেও আসে বাধা। গুপ্তচর সন্দেহে ইব্রাহিমকে আটক করা হয়। এরপর জাতিসংঘের সহায়তা সেখান থেকে ছাড়া পান ইব্রাহিম। পরে জাতিসংঘের সহায়তাতেই শরণার্থী হিসেবে পাড়ি জমান নিউজিল্যান্ডে। এখানে শুরু হয় তাঁর নতুন জীবন। একপর্যায়ে নিউজিল্যান্ডের ভিক্টোরিয়া ইউনিভার্সিটিতে পরিচ্ছন্ন কর্মী হিসেবে কাজ শুরু করেন তিনি। এরপর সেখানে পদোন্নতি পান ইব্রাহিম।

Photo credit: Stuff

বিবিসির খবরে বলা হয়েছে, ইব্রাহিম পরিচ্ছন্নতাকর্মীদের সুপারভাইজার হওয়ার পর ওই ভিক্টোরিয়া ইউনিভার্সিটিতেই পড়াশোনা শুরু করেন। আর ছাত্র অবস্থায় তিনি রাজনীতিতে যুক্ত হন। আইনপ্রণেতা হওয়ার পর নিজের সেই পুরোনো অবস্থান ভুলে যাননি ইব্রাহিম। জয়ের পর তিনি বলেছেন, এই জয় নিম্ন আয়ের শ্রমজীবীদের, এই জয় সাবেক শরণার্থীদের। নিউজিল্যান্ডের সাধারণ নির্বাচনে এবার ইতিহাস সৃষ্টি করেছে প্রধানমন্ত্রী জেসিন্ডা আরডার্নের দল লেবার পার্টি। কারণ বিগত ৫০ বছরের মধ্যে সবচেয়ে বড় বিজয় পেয়েছে তাঁর দল। এ ছাড়া এককভাবে সরকার গঠনের মতো আসন জিতেছে তারা। লেবার পার্টির হয়েই ইতিহাস সৃষ্টি করেছেন ইব্রাহিম। নিউজিল্যান্ডে প্রথম আফ্রিকান বংশোদ্ভূত আইনপ্রণেতা নির্বাচিত হয়েছেন তিনি।

ঋণঃ প্রথম আলো

Post a Comment

0 Comments