বেঙ্গল মিরর ডেস্ক: পশ্চিমবঙ্গের সাধারণ শ্রেণির বাসিন্দাদের অনেকেই ভুয়ো নথিপত্র দিয়ে সিডিউলড কাস্ট অর্থাৎ তপশিলি জাতির শংসাপত্র তুলছে, এমনই অভিযোগ প্রকাশে এসেছে। শুধু তাই নয়, বেশ কয়েকজনের এরকম কাস্ট সার্টিফিকেট বাতিল করেছে জেলা প্রশাসন। বিষয়টি শুধু জেলা প্রশাসনিকস্তরে আটকে নেই, এ নিয়ে কলকাতা হাইকোর্ট পর্যন্ত গড়িয়েছে মামলা। এমনই একটি মামলার প্রেক্ষিতে মঙ্গলবার দৃষ্টান্তমূলক রায় দিল কলকাতা উচ্চ আদালত। হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চ রাজ্যের অনগ্রসর শ্রেণি কল্যাণ দফতরকে নির্দেশ দিয়েছে যাতে তারা বিভিন্ন জেলা প্রশাসনকে জানিয়ে দেয় যে, জাতিগত শংসাপত্র ইস্যুর ক্ষেত্রে ভালোভাবে যেন পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে নেওয়া হয়। পশ্চিমবঙ্গ বাউড়ি সমাজ উন্নয়ন সমিতি এই মামলাটি করেছিল হাইকোর্টে। তারই প্রেক্ষিতে কলকাতা হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চের প্রধান বিচারপতি টিএস শিবজ্ঞানম এবং জাস্টিস হিরন্ময় ভট্টাচার্য মামলায় রায় প্রদান করেন। আদালত এক পর্যবেক্ষণে উল্লেখ করেছে, এভাবে ভুয়ো সার্টিফিকেট দেওয়ার বিষয়টি অত্যন্ত স্পর্শকাতর আর তাই রাজ্যকে অবশ্যই সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নিতে হবে।
জানা গিয়েছে, পশ্চিম বর্ধমান জেলায় ১৭ জনের নামে ভুয়ো জাতিগত শংসাপত্র বার করা হয়েছিল। তার মধ্যে দুজনের সার্টিফিকেট বাতিল করেছেন জেলা প্রশাসন। এ দিন হাইকোর্ট অনগ্রসর শ্রেণি কল্যাণ দফতরের সেক্রেটারিকে নির্দেশ দিয়েছে, তারা যাতে বিভিন্ন জেলা প্রশাসনকে জানিয়ে দেয় যে, জাতিগত শংসাপত্র প্রদানের ক্ষেত্রে এসওপি অর্থাৎ স্ট্যান্ডার্ড অপারেশন প্রসিডিউর তৈরি করে। প্রকৃত তপশিলি জাতিদেরই শংসাপত্র দেওয়া নিশ্চিত করা যায় এবং ভুয়ো সার্টিফিকেট বাতিল করতে নজরদারির কথা উল্লেখ করেছে ডিভিশন বেঞ্চ। বিচারপতি আরও জানিয়েছেন, যদি কোনও দুর্বৃত্ত পরায়ণ মানুষ সার্টিফিকেটের জন্য আবেদন করে, তাহলে যাতে তার বিরুদ্ধে তদন্ত হয় এবং বিধিবদ্ধ ব্যবস্থাও নেওয়া যায়।
অন্যদিকে শুধু মিথ্যে তপশিলি সার্টিফিকেটই নয়, অন্যান্য রাজ্যের বাসিন্দারা ভুয়ো ডোমিসাইল সার্টিফিকেট তুলছে বলেও দীর্ঘদিন ধরে অভিযোগ করছে বাংলা পক্ষ নামে একটি সংগঠন। তাদের অভিযোগ, বিহার ঝাড়খণ্ডের বহু বাসিন্দা, এখানকার একশ্রেণির মানুষের সাহায্য নিয়ে ভুয়ো ডোমিসাইল সার্টিফিকেট বার করছে। তারা বিভিন্ন সরকারি চাকরিতে রাজ্যের বাসিন্দাদের বঞ্চিত করছে বলেও অভিযোগ।
0 Comments