বেঙ্গল মিরর ডেস্ক: মদ-লটারি, সুদ ও ঘুষমুক্ত ভারতবর্ষ গড়ার ডাক দিয়ে কলকাতায় ঝাঁটা হাতে বিশাল মিছিল করল ওয়েলফেয়ার পার্টি অফ ইন্ডিয়া। সোমবার রামলীলা পার্ক থেকে শ্লোগান মুখরিত মিছিল শুরু হয়ে ধর্মতলার গান্ধী মূর্তির পাদদেশ পর্যন্ত যায়। সেখানে সভা হয়।এ দিন হাজার হাজার মহিলা আওয়াজ তোলে,'মদ- লটারি মুক্ত ভারতবর্ষ চাই'। মহিলা ছাড়াও বিশাল সংখ্যক কৃষক, শ্রমিক, শিক্ষক, ছাত্র-যুবদের উপস্থিতি ছিল।
মদ, সুদ, লটারি ও ঘুষের বিরূদ্ধে এমন শৃঙ্খলিত অথচ বলিষ্ঠ মিছিল দেখতে রাস্তার দুধারে বহু মানুষ ভিড় জমিয়েছিল। মিছিলে হাঁটতে হাঁটতে দলটির কেন্দ্রীয় সভাপতি ড: কাসেম রসূল ইলিয়াস বলেন, বাংলা থেকে মদের বিরূদ্ধে যে জোরালো আওয়াজ উঠেছে তা সারা দেশে ছড়িয়ে পড়বে।
রাজ্য সভাপতি মনসা সেন জানান, প্রায় দুই মাস ধরে সারা রাজ্য জুড়ে প্রচার অভিযান হয়েছে। মদ- জুয়া সমস্ত অপরাধের জননী, সুদ মানুষকে শোষণ করছে, ঘুষ ভারতবর্ষের সমাজ জীবনের রন্ধে রন্ধে অভিশাপ হয়ে বাসা বেঁধেছে। আমরা চাই নেতাজি,আজাদের এই পবিত্র মাটি থেকে সমস্ত অন্যায়, অপরাধ দূর হটুক।'
বিশাল মিছিল থেকে মুহুর্মুহু শ্লোগান উঠছে,
'শিক্ষা চাকরি কিছু নাই,মদ লটারি পাড়ায় পাড়ায়,শাসকের বিরূদ্ধে তাই সংগ্রাম চলছে চলবে।'
ডব্লিউপিআই এর রাজ্য সাধারণ সম্পাদক সারওয়ার হাসান বলেন, আশাকরি আজকের এই ঐতিহাসিক অন্দোলনের পর সরকারের টনক নড়বে। আমাদের ধারণার বাইরে মানুষ এসেছেন, এই জনঝড়ে ভারতবর্ষ থেকে মদ - সুদ - ঘুষ ও লটারি উড়ে যাক। সরকারকে বুঝতে হবে, মদ- ঘুষের বিরূদ্ধে মানুষ কতটা রেগে আছে।
ওয়েলফেয়ার পার্টির ছাত্র যুবদের সামনে দাঁড়াতেই আওয়াজ এলো, 'নেতাজি তিতুমীরের এই বাংলায় মদ-ঘুষের ঠাই নাই'।
আলিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের এক ছাত্র বলেন, মদ - ঘুষের বিরূদ্ধে এতো বড় রাজনৈতিক বিক্ষোভ আগে দেখিনি। ঘুষের কারণে হাজার হাজার যোগ্য চাকরি প্রার্থী আজ রাস্তায় অন্দোলন করছে, পার্থ মানিক জেলে, নিয়োগ নেই। এই রকম দুর্বিষহ অবস্থায় এই ধরনের সাহসী অন্দোলন আমাদের সাহস যোগাবে।'
মদ লটারির লাইসেন্স দেওয়ার জন্য সমাবেশ থেকে সরকারের বিরূদ্ধে তীব্র ক্ষোভ উগরে দেন নেতারা। সরকার অন্যায়কে প্রশ্রয় দিচ্ছে বলেও অভিযোগ করেছে দলটি। বক্তব্যের মাঝে মাঝে শ্লোগান চলতে থাকে।অনেকেই সন্তান কোলে, পতাকা হাতে দীর্ঘপথ হাঁটেন। তেমনই বজবজ থেকে ছেলে কোলে মিছিলে হাঁটেন ইয়াসমিনা পারভীন। তিনি জানান , বাংলায় মদের যেভাবে রমরমা বাণিজ্য, তাতে ঘরে বসে থাকতে পারলাম না। প্রতিবাদ করতে তাই পথে নেমেছি।
মিছিলে হাঁটেন দলের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক সুব্রামনি আরুমুগাম ও সীমা মহসিন, প্রাক্তন কেন্দ্রীয় সভাপতি ড: মুজতবা ফারুক, কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য শফিক মাদানী, দলের শ্রমিক সংগঠন ফিটুর জোসেপ জন, কেন্দ্রীয় সহ সভাপতি ডাঃ রইসুদ্দিন, রাজ্য সহ সভাপতি মির্জা নুরুল হাসান, মহিলা নেত্রী রহিনা খাতুন, যুবনেতা আরমান আলি, মন্টুরাম হালদার সহ অনেকে।
0 Comments