সোশ্যাল মিডিয়ায় মিথ্যা-প্রচার: তথ্য-সচেতন সমাজ গড়তে বিকল্প পাঠচক্র শহরে

জাহানারা খাতুন ও আসিফ রেজা আনসারী

যেকোনও সিদ্ধান্ত গ্রহণ বা কাজের জন্য সব মানুষেরই একটা সাধারণ জ্ঞান বা তথ্য দরকার। এই তথ্য বা ইনফরমেশনের প্রধানতম উৎস হয়ে দাঁড়িয়েছে প্রযুক্তিনির্ভর ব্যবস্থাপনা। আমরা যখন কোনও কিছু ভাবি বা সিদ্ধান্ত নিই বা আমাদের কাছে কোনও ইনফরমেশন আসে তার বেশিরভাগটাই মোবাইল, হোয়াটসঅ্যাপ, অর্থাৎ– সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমেই আমরা পেয়ে থাকি। কিন্তু এই তথ্যগুলি কতটা সত্য বা নির্ভরযোগ্য তা নিয়ে কিন্তু প্রশ্ন থাকেই। অধিকাংশ ক্ষেত্রে ভুয়ো মেসেজ বা বার্তা ফেসবুক–হোয়াটসঅ্যাপের মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। এর কাউন্টার ন্যারেটিভ কী হবে, সে-সম্পর্কে অধিকাংশ মানুষ জানেন না। এমন অবস্থায় মানুষের কাছে যুক্তিগ্রাহ্য, সত্য ও নির্ভরযোগ্য তথ্য তুলে ধরার জন্য বিশেষ উদ্যোগ নিয়েছে 'নো ইওর নেবার' বা প্রতিবেশীকে জানুন নামে একটি সংস্থা। এই সংস্থার উদ্যোগে গড়ে উঠছে ‘চেয়ার ফর রিডার’। রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায় এই সংস্থা গড়ে তুলতে চাইছে স্থায়ী পাঠচক্র। 

তরুণ প্রজন্মের কাছে ‘বই পড়াকে’ ছোঁয়াচে রোগের মতো ছড়িয়ে দিতে চাইছেন উদ্যোক্তারা। কোনও বই পড়লে কীভাবে সঠিক জিনিস জানা যাবে বা একটি বিষয়ের গভীরতায় পৌঁছতে হলে ভিন্নধর্মী বই পড়া যে দরকার, সে-সম্পর্কে তরুণ প্রজন্মের কাছে আগ্রহ বাড়িয়ে তুলতেই এই উদ্যোগ। 

বিষয়টির উদ্যোক্তা সমাজ–গবেষক সাবির আহমেদ বলেন, আমরা আপাতত কলকাতার মোমিনপুর এলাকায় একটি পাঠচক্র তৈরি করতে পেরেছি। রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায় এই উদ্যোগ গ্রহণ করা হবে। তবে আগামী ১৩ জুলাই আলিপুর মিউজিয়ামে এক বিশেষ অনুষ্ঠানের মাধ্যমে এই বই পড়াকেন্দ্রিক কর্মসূচির আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন হবে। 

representative Image 

সাবির আহমেদ আরও বলেন, আমাদের স্বতন্ত্রতা হচ্ছে একটি গতিশীল পড়ার স্থান তৈরি করা। যেখানে দেশের বৈচিত্র্য, সংহতি, বহুত্ব, ইতিহাস, ভ্রমণ, সংস্কৃতি, ঐতিহ্যের উপর বইয়ের নির্বাচিত সংকলনগুলি থাকবে। আমাদের মিশন সাকসেস করতে বিভিন্ন সংস্থা এবং প্রতিষ্ঠানের সহযোগিতামূলক উদ্যোগকেও স্বাগত জানাই। আমরা লেখকদের মাধ্যমে বই আলোচনার আয়োজন করতে চাই। এতে পাঠক, লেখক ও আগ্রহীদের মধ্যে পারস্পরিক ভাব-বিনিময় হবে।

অনেকেই মনে করছেন, মানুষের মধ্যে ফেসবুক বা হোয়াটসঅ্যাপের মাধ্যমে একটি বিশেষ শ্রেণি ঘৃণামূলক বা মিথ্যা প্রচারণা চালাচ্ছে। মানুষের বিশেষ মতাদর্শের দিকে চালিত করার যে অপকৌশল তা রুখে দেওয়া যাবে ‘চেয়ার ফর রিডার’ কর্মসূচির মাধ্যমে। সাবির আহমেদ জানান, আমরা বইপত্র সরবরাহ করব, পাঠকদের সামনে খুলে যাবে নতুন দরজা। এভাবে মানুষ সঠিক তথ্য–সমৃদ্ধ সচেতন নাগরিক হয়ে উঠবেন। জানা গিয়েছে, ‘নো ইওর নেবার’ সংস্থার এই কাজে সহযোগী হয়েছে ‘সবর ইন্সটিটিউট’।

Post a Comment

0 Comments