বেঙ্গল মিরর ডেস্ক: বেশ কয়েকটি পুরনো মামলার প্রেক্ষিতে কিছুদিন আগে কলকাতা হাইকোর্ট রাজ্যের শতাধিক পিছিয়ে পড়া জনজাতির অন্যান্য অনগ্রসর শ্রেণি অর্থাৎ ওবিসি সার্টিফিকেট বাতিল বলে ঘোষণা করেছে। অবশ্য যারা ইতিমধ্যে চাকরি করছেন কিংবা সংরক্ষণের সুযোগ পেয়ে পড়াশোনা বা অন্যান্য কাজের সঙ্গে যুক্ত আছেন কিংবা প্রক্রিয়ার মধ্যে আছেন তাদের উপর এই রায়ের প্রভাব পড়বে না বলে জানিয়েছে কলকাতা উচ্চ আদালত। আর এ নিয়ে দীর্ঘ টালবাহানার পর অবশেষে সুপ্রিম কোর্টে গিয়েছিল রাজ্য সরকার। তাতে বেশ কিছু গলদ ধরা পড়ে বলে পুনরায় নথি জমা করতে বলেছিল শীর্ষ আদালত। অবশেষে রাজ্য সরকার উদ্যোগী হয়ে নথিপত্র জমা করেছে এবং শীর্ষক একটা গৃহীত হয়েছে সেই মামলা। এরই মধ্যে বেশ কয়েকটি মুসলিম সংগঠন একই বিষয় নিয়ে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছে। সেগুলোও আদালতে গৃহীত হয়েছে। আজ বেঙ্গল মাদ্রাসা এডুকেশন ফোরামের তরফে জানানো হয়েছে, ওবিসি সংক্রান্ত তাদের মামলা সুপ্রিম কোর্টে গৃহীত হয়েছে।
Representative image |
জানা গিয়েছে, বেঙ্গল এডুকেশন মাদ্রাসা ফোরামের পাশাপাশি সারা বাংলা সংখ্যালঘু যুব ফেডারেশন, বেস, পিস প্রভৃতি সংগঠনে সুপ্রিম কোর্টে এ বিষয়ে নজর রাখছে। ওবিসি সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে সংশ্লিষ্ট ভুক্তভোগীকে মামলার পার্টি করতে চাইছে বেস। বিভিন্ন মুসলিম সংগঠন একদিকে যেমন যৌথভাবে মামলায় লড়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। একইসঙ্গে শতাধিক চাকরিপ্রার্থীও আদালতে মামলায় যুক্ত হতে চলেছে বলে খবর।
প্রসঙ্গত, দেশের স্বাধীনতার পর থেকেই শিক্ষা ও কর্মসংস্থানের ক্ষেত্রে ধীরে ধীরে পিছোতে থাকে মুসলিম সম্প্রদায়। দলিত-আদিবাসীরাও যুগ যুগ ধরে নানান কারণে পিছিয়ে রয়েছে। এই পিছিয়ে পড়া সম্প্রদায়গুলোকে এগিয়ে নিয়ে যেতে ভারত সরকার চালু করেছিল সংরক্ষণ ব্যবস্থা। প্রথম দিকে অবশ্য তপশিলি জাতি ও উপজাতির জন্যেই সংরক্ষণ চালু হয়। পরে বিবেচনা করা হয় অন্যান্য পিছিয়ে পড়া জনজাতিদের। এক্ষেত্রে মুসলিমদের কয়েকটি জাতিকে ওবিসি অর্থাৎ অন্যান্য অনগ্রসর শ্রেণির তালিকাভুক্ত করে সংরক্ষণের সুযোগ দেওয়া হয়। অন্যান্য রাজ্যের মত পশ্চিমবঙ্গ সরকারও এই সংরক্ষণ বিধি চালু করেছিল। ২০১১ সালে তৃণমূল ক্ষমতায় আসার পর আরও বেশ কয়েকটি জাতিকে এই ওবিসি তালিকাভুক্ত করা হয়। আর এই সংরক্ষণ চালু হতেই উঠে পড়ে লাগে আরএসএস ঘনিষ্ঠ কয়েকটি সংগঠন। পুরনো বেশ কয়েকটি মামলায় সম্প্রতি কলকাতা হাইকোর্ট অনেকগুলি জনজাতিকে ওবিসি তালিকা থেকে বাদ দিয়েছে অর্থাৎ তাদের ওবিসি সার্টিফিকেট অবৈধ ঘোষণা করেছে। এখন দেখার শীর্ষ কোটে কি হয়।
0 Comments