নবান্ন অভিযান: অশান্তির ছক বিজেপির!

আসিফ রেজা আনসারী

আগামীকাল ছাত্র সমাজের ব্যানারে নবান্ন অভিযানের ডাক দিয়েছে বিজেপি ও তার শাখা সংগঠনগুলি। যদিও প্রকাশ্যে এ কথা স্বীকার করছে না বিজেপি। কিন্তু বিজেপি নেতাদের বক্তব্য, সাধারণ মানুষকে মিছিলে অংশগ্রহণের আহ্বান ও ইত্যাদি কার্যকলাপ থেকে স্পষ্ট যে এ কর্মসূচি বিজেপিরই। যেকোনো রাজনৈতিক দলের প্রতিবাদ কর্মসূচির অধিকার রয়েছে। এই সাংবিধানিক অধিকার কোনও সরকার বা কেউই কেড়ে নিতে পারে না। কিন্তু একইসঙ্গে বেশ কিছু আশঙ্কাও দেখা দিচ্ছে। 

রাজ্য পুলিশে তরফে দাবী করা হচ্ছে, তারা বিভিন্ন সূত্রে জানতে পেরেছেন নবান্ন অভিযানকে কেন্দ্র করে একটা বড়সড় ধরনের গন্ডগোল বাঁধানোর ছক কষা হয়েছে। ভিন রাজ্য থেকে বিভিন্ন সমাজবিরোধীরা আসতে পারে। এমনকী মিছিলের ভিড়ে ঢুকে যেতে পারে দুষ্কৃতীরা। এমনকি তারা খুনোখুনি করতে পারে বলেও আশঙ্কা করা হচ্ছে। আর যদি তাই হয় তাহলে উত্তেজনা ছড়াবে। 

পুলিশের একটি সূত্র বলছে, মিছিলের ভিড় থেকে এমন কিছু উত্তেজনাকর পরিস্থিতি তৈরির চক্রান্ত হতে পারে, যার ফলে আইনশৃঙ্খলা বজায় রাখতে পুলিশ বল প্রয়োগ করতে বাধ্য হবে। আর এই সুযোগকে কাজে লাগে বিরাট অশান্তি ছড়াতে পারে তথাকথিত ছাত্রসমাজ। আর তাই পুলিশ যে কোনোভাবে এই নবান্ন অভিযান ঠেকাতে বদ্ধপরিকর বলে খবর।

জানা গিয়েছে, কলকাতায় প্রায় ৭-৮টি জায়গায় করা হবে ব্যারিকেড। থাকবে চার থেকে পাঁচ হাজার অতিরিক্ত পুলিশ। সিনিয়র অফিসাররা সরাসরি ময়দানে থাকবেন। প্রত্যেকটি ব্যারিকেডের কাছে ৫০০ থেকে ৬০০ পুলিশ মোতায়েন থাকবে। আগামীকাল যেহেতু ইউজিসির নেট পরীক্ষা অর্থাৎ কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকতা বা গবেষণার জন্য  যোগ্যতামানের পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। আগামীকাল তাই গণপরিবহন বজায় রাখতে সরকারের তরফে পর্যাপ্ত ব্যবস্থা থাকছে বলে খবর। বাম ছাত্র সংগঠনের তরফে জানানো হয়েছে তারা এই আন্দোলনের সঙ্গে থাকছেন না। রাজ্যের গণআন্দোলনের ধারাকে ব্যাহত করতে পারে এমন কোনও কিছুর সঙ্গে তারা থাকবেন না।

অনেকেই বিজেপির এই আন্দোলন নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন। বিজেপিশাসিত রাজ্যগুলিকে যেভাবে নারী নির্যাতিত হন, তার কোনটারই সঠিক বিচার হয় না। তাহলে তাদের কাছে এই আন্দোলনের কোনও মানে আছে? প্রশ্ন তুলছে অনেকেই। শুধু তাই নয়, বিজেপির বড় বড় নেতাদের বিরুদ্ধে ধর্ষণ কিংবা নারী ঘটিত নানান অভিযোগ রয়েছে। তাহলে তারা কোন মুখে এই আন্দোলনে নামছেন? বিলকিস বানুর ধর্ষকদের যে বিজেপি সরকার মুক্তি দিয়েছে, যারা নানান জায়গায় জাতিদাঙ্গা লাগায় বলে অভিযোগ, তাদের কাছে এই ধরনের আন্দোলন আদৌ কি কাম্য? প্রশ্ন তুলছেন অনেকে।

Post a Comment

0 Comments