বেঙ্গল মিরর ডেস্ক: পার্লামেন্টে বিভিন্ন মুসলিম বিরোধী বিল পাস করার ক্ষেত্রে বিজেপি ও তৃণমূল ভাইভাই ভূমিকা পালন করে। শুধু তাই নয়, মুখে বড় বড় কথা বললেও বিজেপির হয়েই কাজ করে তৃণমূল। এমনকী, দুর্নীতির ক্ষেত্রেও কেউ কম যায় না। তৃণমূলের আমলে দুর্নীতিবাজরা বিজেপিতে গেলে ধোয়া তুলসিপাতা হয়ে যায়। এরই মধ্যে ফের বিজেপি তৃণমূলের আঁতাতের অভিযোগ উঠল। তাও আবার একটি সংখ্যালঘু হস্টেলে।
জানা গিয়েছে, বাবরি মসজিদ ধ্বংসের উপর নির্মিত আনন্দ পট্টবর্ধন পরিচালিত তথ্যচিত্র 'রাম কে নাম' প্রদর্শন ঘিরে উত্তেজনা ছড়ায় কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের কারমাইকেল হস্টেলে। যার জেরে বিশৃঙ্খলা এবং মারধরের অভিযোগও সামনে এসেছে।শেষ পর্যন্ত বন্ধ করে দেওয়া হয় তথ্যচিত্রের প্রদর্শন।
জানা গেছে, ৬ ডিসেম্বর বাবরি ধ্বংসের বর্ষপূর্তি উপলক্ষ্যে শুক্রবার রাতে এই তথ্যচিত্রের প্রদর্শনের আয়োজন করে হস্টেলের একদল পড়ুয়া। এই প্রদর্শনীর জন্য হস্টেল কর্তৃপক্ষের পক্ষ থেকে মৌখিক অনুমতিও নেওয়া হয় বলে দাবি আয়োজকদের। অন্যদিকে হস্টেলের প্রাক্তন কিছু অবৈধ আবাসিক যারা তৃণমূলের নেতা বলে দাবি করে, তারা ছবির প্রদর্শনীতে বাধা দেয় বলে অভিযোগ।
হস্টেলের এক আবাসিক বলেন, অভিরূপ চক্রবর্তী নামে হস্টেলের বাইরের এক ব্যক্তির উসকানিতে প্রাক্তন কয়েকজন আবাসিক এই ছবির প্রদর্শনীতে বাধা দেয়। যারা আসলে বেআইনিভাবে হস্টেলে থাকেন। আবাসিকদের মারধর করে। আবার আমাদের নামেই থানায় লিখিত অভিযোগ করে। তিনি আরও বলেন, আমাদের এই হস্টেলে মূলত বিশ্ববিদ্যালয়ের সংখ্যালঘু পড়ুয়ারাই থাকেন। এই সিনেমার প্রদর্শনে বাধা দেওয়ার অর্থ বিজেপির হিন্দুত্ব ও মুসলিম বিদ্বেষকে সমর্থন করা। আরএসএসের হয়ে কাজ করা তৃণমূলের মুসলিম ছেলেরা এই সিনেমার প্রদর্শনে বাধা দিয়েছেন বলে অভিযোগ।
জানা গিয়েছে, ছবির প্রদর্শনীতে আমন্ত্রিত ছিলেন আইনজীবী সামিম আহমেদ। তাঁর প্রতিক্রিয়া, রাম কে নাম বাবরি মসজিদ ধ্বংসের ঘটনাকে নিন্দা করে সিনেমা। হস্টেলের কয়েকজন ছাত্র এই প্রদর্শনীর উদ্যোগ নিয়েছিল। আমন্ত্রণ পেয়ে হাইকোর্ট পাড়ায় গিয়ে সংবিধানের কয়েকটি বই কিনেছিলাম তাদের উপহার দেবো বলে। পুলিশে অভিযোগ সম্পর্কে জানতে চাওয়া হলে তিনি আরও বলেন, কিছুক্ষণ আগে শুনলাম একটি এফআইআর হয়েছে যাতে আমার নামও আছে। এতে আমি অখুশিও হইনি, বিস্মিতও হইনি।
প্রসঙ্গত, ১৯৯২ সালের ৬ ডিসেম্বর অযোধ্যায় শতাব্দী প্রাচীন বাবরি মসজিদ ধ্বংস করে দেয় হিন্দু করসেবকরা। এই বিষয়ের উপর গবেষণামূলক তথ্যচিত্র ‘রাম কে নাম’ নির্মাণ করেন আনন্দ বর্ধন। কিভাবে মসজিদ ভাঙা হয়, বিজেপি কিভাবে জড়িয়ে আছে তা দেখানো হয়েছে। সেই বিজেপির কুকীর্তি তুলে ধরতে বাধা দিল তৃণমূল।এমনই অভিযোগ সামনে এসেছে।
0 Comments