নেতাজি ইন্ডোরের মাধ্যমে ব্রিগেড সমাবেশ বানচাল করছে তৃণমূল? ২৬-এর কর্মসূচি নিয়ে বিভ্রান্তি!

আসিফ রেজা আনসারী

আগামী ২৬ এপ্রিল ব্রিগেড ময়দানে ওয়াকফ আইনের বিরুদ্ধে মহাসমাবেশ করবে অল ইন্ডিয়া মুসলিম পার্সোনাল ল' বোর্ড। সম্প্রতি সংগঠনের তরফে এমনটাই ঘোষণা করা হয়েছিল। জানানো হয়েছিল পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন মুসলিম সংগঠন পার্সোনাল ল' বোর্ডের ব্যানারে এই সমাবেশে শামিল হবে। নয়া আইন বাতিল করা হোক এবং সংবিধান প্রদত্ত মৌলিক অধিকার ফিরিয়ে দেওয়ার দাবিতে সরব হওয়ার কথা বলেছিল ল' বোর্ডের। কিন্তু মাঝপথে এই সমাবেশ হচ্ছে না বলে ঘোষণা করলেন ব্রিগেড ময়দানে সমাবেশের অন্যতম আহবায়ক তথা রেড রোডে ঈদের নামাযের ইমাম কারী ফজলুর রহমান। তিনি মঙ্গলবার এক প্রেস বিজ্ঞপ্তি জারি করে বলেছেন, তার সঙ্গে সংগঠনের কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের কথা হয়েছে। রাজ্যের পরিস্থিতি সম্পর্কে তাঁরা ওয়াকিবহাল। একইসঙ্গে ষোল তারিখ নেতাজি ইন্ডোর স্টেডিয়ামে যে সমাবেশ তাতে বক্তব্য রাখবেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। উপস্থিত থাকছেন সংগঠনের সভাপতি মাওলানা খালিদ সাইফুল্লাহ রহমানী। স্বাভাবিকভাবে ব্রিগেড সমাবেশের কোনও যৌক্তিকতা নেই। এমনই দাবি করেন কারী ফজলুর রহমান। তার এই ঘোষণায় যথেষ্ট বিভ্রান্তি তৈরি হয়েছে। এরই প্রেক্ষিতে পাল্টা বিবৃতি জারি করল সমাবেশের অন্যান্য সহ-আহবায়করা। 

ব্রিগেড সমাবেশ ঘোষণার ছবি 

মঙ্গলবার রাতে এক ভিডিয়োবার্তায় ব্রিগেড ময়দানের অন্যতম সহ আহ্বায়ক মাওলানা মুহাম্মদ কামরুজ্জামান, মাওলানা ওমর ওবাইস, ইসাহাক মল্লিক, আলমগীর সর্দার, জামাতে ইসলামী হিন্দের সাবির-সহ বিভিন্ন সংগঠনের শীর্ষ কর্তারা উপস্থিত ছিলেন। তারা বলেছেন, ফজলুর রহমান যে বিবৃতি দিয়েছেন তা বিভ্রান্তিকর এবং নিন্দাযোগ্য। ব্রিগেড ময়দানে সমাবেশের জন্য ইতিমধ্যে কলকাতা পুলিশ এবং ভারতীয় সেনার কাছে অনুমতি নেওয়া হয়েছে। প্রস্তুতি প্রায় চূড়ান্ত। ইতিমধ্যে গ্রামবাংলায় প্রচার হচ্ছে। এমতাবস্থায় মুসলিম পার্সোনাল ল' বোর্ডের কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের সাথে আলোচনা চলছে। এখনই আপনারা বিভ্রান্ত হবেন না। সমাবেশ হবেই। 

সোশ্যাল মিডিয়ায় অনেকের সমালোচনা করতে শুরু করেছেন যে, তৃণমূল কংগ্রেস আন্দোলন বানচাল করতে নেতাজি ইন্ডোর স্টেডিয়ামে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে বক্তা হিসেবে আহ্বান জানিয়েছে। শুধু তাই নয়, ওয়াকফ নিয়ে তৃণমূল ছাড়া অন্য সংগঠন যাতে বৃহত্তর আন্দোলন না করতে পারে, তাই ফিরহাদ হাকিম-সহ একগুচ্ছ আলেম-ওলামাকে পথে নামিয়েছেন। আগামী নির্বাচনে ওয়াকফ ইসুকে হাতিয়ার করে বৈতরণী পার হতে চাইছে তৃণমূল, অন্যদিকে বিজেপি দাঙ্গা-হাঙ্গামা করে হিন্দু ভোট একজোট করতে চাইছে বলেও সোশ্যাল মিডিয়ায় অনেকে লেখালেখি করছে। অনেকেই লিখছেন, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ক্ষমতায় আসার পর ওয়াকফ নিয়ে সিবিআই তদন্ত শুরু হয়েছিল, সেই তদন্ত রিপোর্ট প্রকাশিত কেন হল না?  তৃণমূলের রাঘব বোয়ালরা ওয়াকফ সম্পত্তি লুট করছে নাকি তা স্পষ্ট হওয়া দরকার। এই প্রেক্ষিতে বিষয়টি আরও জটিল হচ্ছে বলে বিশ্লেষকরা মনে করছেন। 

Post a Comment

0 Comments