জাহানারা খাতুন
এসএসসি ২০১৬ মামলায় চাকরিচ্যুত শিক্ষকদের এপ্রিল মাসের বেতন প্রদান নিয়ে আইনি ও রাজনৈতিক চাপের মাঝে আজ কলকাতার হাজরার সুজাতা সদনে রাজ্যের বিভিন্ন জেলার প্রায় পাঁচ শতাধিক প্রধান শিক্ষক-শিক্ষিকা জরুরি বৈঠকে মিলিত হন। রবিবার সকাল ৯টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত চলা এই বৈঠকে সর্বসম্মতভাবে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়, প্রধান শিক্ষক-শিক্ষিকারা যোগ্য চাকরিচ্যুতদের বেতন রিকুইজিশন আইওএসএমএস পোর্টালে আপলোড করবেন, তবে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবেন সংশ্লিষ্ট জেলা বিদ্যালয় পরিদর্শক। সেইমতো প্রত্যেক জেলা বিদ্যালয় পরিদর্শককে লিখিতভাবে জানাবেন প্রধান শিক্ষক-শিক্ষিকারা, এবং সেই চিঠির একটি কপি স্কুল শিক্ষা কমিশনার ও মধ্যশিক্ষা পর্ষদের সভাপতিকে ই-মেইলের মাধ্যমে পাঠানো হবে।
![]() |
নিজস্ব ছবি |
একদিকে শাসকদলের বিধায়ক, সাংসদ ও নেতারা হুমকি দিচ্ছেন যে, যদি প্রধান শিক্ষক-শিক্ষিকারা আদালতের নির্দেশ মেনে চাকরিচ্যুত শিক্ষকদের স্কুলে প্রবেশ বা বেতন বন্ধ করেন, তাহলে তাঁদের বিদ্যালয়ে ঢুকতে দেওয়া হবে না। অন্যদিকে বিরোধীপক্ষ হুঁশিয়ারি দিচ্ছে, যদি আদালতের নির্দেশ অমান্য করে কেউ স্কুলে আসেন বা বেতন পান, তাহলে আরটিআই এবং আদালতের অবমাননার মামলা দায়ের করা হবে।
এ নিয়ে স্কুল শিক্ষা দফতর, মধ্যশিক্ষা পর্ষদ বা জেলা বিদ্যালয় পরিদর্শকদের তরফে একাধিকবার লিখিতভাবে জানানো সত্ত্বেও কোনো উত্তর না মেলায়, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রধানরা চরম বিভ্রান্তিতে পড়েন। আইনি পরামর্শ অনুযায়ী, যদি কেউ হাজিরা খাতায় সই করান বা বেতন প্রসেস করেন, তাহলে তিনি আদালতের অবমাননার মুখোমুখি হতে পারেন।
এ দিনের সভায় অ্যাডভান্সড সোসাইটি ফর হেডমাস্টার্স অ্যান্ড হেডমিস্ট্রেস–এর রাজ্য সাধারণ সম্পাদক চন্দন মাইতি জানান, রাজ্যের প্রধান শিক্ষক-শিক্ষিকারা তাঁদের যোগ্য চাকরিচ্যুত সহকর্মীদের পাশে থাকার সংকল্প নিয়েছেন। তিনি দাবি জানান, শীর্ষ আদালতের রায়কে মান্যতা দিয়ে অবিলম্বে যোগ্যদের পুনর্নিয়োগ করুক রাজ্য সরকার ও স্কুল সার্ভিস কমিশন। পাশাপাশি শূন্যপদে স্বচ্ছতার সঙ্গে নিয়োগেরও দাবিও জানান তিনি। সভায় সর্বসম্মতভাবে সিদ্ধান্ত হয়, রাজ্যের সমস্ত প্রধান শিক্ষক-শিক্ষিকা এই সংকটময় পরিস্থিতিতে ঐক্যবদ্ধভাবে একই নীতিতে চলবেন।
0 Comments